শিরোনাম

বোন হলো শান্তি সুখের এক আঙ্গিনা || ফয়জুল্লাহ আমিন কিবরিয়া

বোন হলো শান্তি সুখের এক আঙ্গিনা 
ফয়জুল্লাহ আমিন কিবরিয়া

পৃথিবীর যত সম্পর্ক আছে তার মাঝে ভাই বোনের সম্পর্ক একটা মধুর সম্পর্ক তাতে আছে আদর স্নেহ মায়া মমতা ভালোবাসা ও শাসন। এ সম্পর্ক কখনো স্বার্থান্বেষী হয় না। হয় না দুঃখের সময় দূর, আর সুখ দেখলে লালশার কু-মতলবে কাছে আসা। ভাই পরম আত্মতৃপ্তি হয় যখন বোন সংসার জীবনে সুখী হয়। ভায়ের রিদঙ্গনে কষ্ট বেদনার পাহাড় ভেঙ্গে পড়ে যখন বোন সংসার জীবনে অসুখী হয়। তাই তো দেখা যায় নিজের শত অভাব অনটন চেপে রেখে বোনের সুখের জন্যে সর্বস্ব্য বিলীন করে ভাই। 
যদি কারো বড় ভাই অথবা বড় বোন থাকে তাহলে তাকে বুজতে হবে সে একটা সুখের স্বর্গে বাস করছে। আর যদি কারো বড় ভাই বোন উভয় থাকে তাহলে সে সুখ স্বর্গের বাদশা হয়ে যাবে। বোনের ভালোবাসা কেমন হয় সেটা বলে প্রকাশ করা যাবে না। তবে কিছুটা অনুমান তো করা যাবে ? যখন বোনের বিয়ে হয়ে যাবে তখন বুজতে আর বাকি থাকবে না যে আসলে বোন কি মমতার আধার।  মনের আকাশটা কেমন জানি অন্ধকার হয়ে বিষম কালো মেঘে ডেকে যায়। শরতের কাশফুল শিউলি কামিনী টগর আর সকালের শিশির ভেজা ঘাসগুলো কেমন জানি নিজেকে লুকিয়ে নেয়। হেমন্তের পুলি পিটা আর বসন্তের কালো কোকিল আর ডাকে না। 
মনে হয় গ্রীস্মের প্রচণ্ড গরমে আমি পিপাসিত। বর্ষার ডেওয়ে আমি ভেসে কোথায় হাড়িয়ে যাচ্ছি। তাই তো আমি অধম বোনের তরে দু লাইন লিখি।

বুক ফাটিয়ে ঝড় উঠে
যে বোনের হলে বিয়ে,
সেই ঝড়েরি সমাপ্তি
হয় ভাগ্না ভাগ্নী নিয়ে।

বোন হলো শান্তি
সুখের এক আঙ্গিনা,
সদা খুশি রাহো 
তুমি এটাই কামনা।

ভাই বোন থাকলে বিশেষ করে বড় ভাইবোন থাকলে অনেক ধরণের সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। অসুবিধা যে নেই তাও বলবো না। কিন্তু সুবিধাই অনেক বেশি। বিশেষ করে বড় একটি বোন থাকলে এমন অনেক ধরণের বিষয়ে সাহায্য পাবেন যা অন্য কারো কাছ থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।
 যখন ভাইবোনের সাথে কোনো বিষয় নিয়ে ঝগড়া বেঁধে যায় তখন অনেকেই মনে করেন বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়াটাই মনে হয় ভালো ছিল। কিন্তু আসলেই কি তাই? যারা বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান তারা বলে আবার অন্য কিছু। জানতে চান একজন বড় বোন থাকার মজার দিকগুলো? চলুন তবে জেনে নেয়া যাক।

🔰বড় বোন থেকে জীবন সম্পর্কে ভালো উপদেশ পাওয়া যায় । যখনই আপনি জীবনের কোনো ক্ষেত্রে আটকে যাবেন আপনার বড় বোন কিন্তু বিনা স্বার্থে আপনাকে ভালো কিছু উপদেশ দিতে পারবেন। 
🔰অনেক সিদ্ধান্তই আপনার বড় বোন নেবেন। আপনার ভালো মন্দ কোথায় কি করতে হবে সেটা কিন্তু সে আপনার তুলনায় একটু বেশি জানে। 
আরও একটি অসুবিধায় পড়া হয় বড় বোন থাকলে সেটি হলো আপনি যতো বড়ই হোন না কেন সিন্ধান্ত নেবার সময় বড় বোনটি সে কাজটি আপনাকে কমই করতে দেবেন।
🔰আপনার দোষের ভাগীদারও আপনার বড় বোন হবেন।কেননা আপনি যখন কোন দোষ করবেন তখন কিন্তু লোক আপনার বোনকেও ছাড় দিবে না। বললে তোমার ভাই এমন তেমন। 
বড় বোন হয়ে ছোটকে কিছু শেখাতে পারো না ?
🔰 রুম এবং জিনিসপত্র ভাগাভাগির যন্ত্রণায় পড়তে হবে আপনাকে।
অসুবিধার আরেক অংশ সব কিছু শেয়ার করার যন্ত্রণা। বিছানা থেকে শুরু করে সব কিছু শেয়ার করতে হবে বড় বোনটির সাথে।

🔰আপনাদের পরিবার সম্পর্কে তিনি বেশ ভালোই জানেন।
তবে সুবিধা হলো পরিবার সম্পর্কে সব ধরণের অভিযোগ তার কাছে করতে পারবেন যা অন্য কারো কাছে করতে পারবেন না। কারণ তিনিও জানেন আপনাদের পরিবারের অবস্থা সম্পর্কে।

🔰আপনার বড় বোনটি সব সময় আপনার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবেন।
যা অকাজ ঘটিয়েছেন সব বিনা দ্বিধায় বড় বোনের কাছে বলে দেয়া যায়। কারণ আপনি নিজেও জানেন বোনটি কখনোই আপনার গোপন তথ্য কারো কাছে ফাঁস করবেন না।

🔰আপনার জীবনের অনেক ভীতি দূর করতে তিনিই সাহায্য করতে পারবেন।
প্রথম স্কুলে যাওয়ার ভয় থেকে শুরু করে অচেনা একজনের সাথে পরিচয়ের ভয় সব কিছুই বুঝিয়ে দূর করতে পারবেন আপনার বড় বোনটি। কারণ অভিভাবকের চাইতে আপনার শিশু মন বড় বোনের দিকেই বেশি ঝুঁকে থাকে।

🔰আপনার হয়ে অভিভাবককে রাজি করানোর কাজটিও বড় বোন করে দেবেন।
কোথাও ঘুরতে যাবেন, কিংবা পরীক্ষায় খারাপ করেছেন? চিন্তা নেই বড় বোনকে গিয়ে একটু বলুন। তিনি ঠিকই আপনার অভিভাবককে বুঝিয়ে রাজি করিয়ে ফেলতে পারবেন আপনার ঘুরতে যাওয়া অথবা পরীক্ষার খাতায় সাইন করার ব্যাপারটি।

🔰 যে কোনো প্রয়োজনে বড় বোনের কাছে হাত পাততে লজ্জা লাগবে না।
আপনার হাত খরচের টাকা শেষ হয়ে গেলেও চিন্তা নেই। যা অন্য কারো কাছে করতে পারবেন না তা ঠিকই বড় বোনের কাছে করতে পারবেন। ধার নেয়া হলেও কিন্তু তা আর শোধ দিতে হয় না।

🔰 আপনার ভুল শোধরাতে সব সময় সাহায্য করবেন বড় বোনটি।
আপনার সব ভুলগুলো তিনি খুব ভালো করে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝিয়ে শোধরাতে পারবেন। কারণ তিনি নিজে পার করে এসেছেন বলে আপনার সব কিছুই বেশ ভালো বুঝতে পারবেন।
পরিশেষ মাওলা পাকের দরবারে ফরিয়াদ আমার বড় বোনদের সহ সকল বড় বোনদের যেন কোন অমঙ্গল না হয়। সর্বদায় যেন হাসি খুশি জীবন যাপন করতে পারে! 
----------------------------------------------------------
শিক্ষার্থী : দারুল উলূম দেওবন্দ (ভারত) 

No comments